ধরুন আপনি একটি ল্যাপটপ কিনতে চাচ্ছেন। এখন ল্যাপটপ কিনার আগে আপনি গুগলে ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখছেন যে আপনার বাজেটের মধ্যে কোন ল্যাপটপটি সবচেয়ে ভালো হবে।
কোন স্পেসিফিকেশনের ল্যাপটপটি আপনার কাজের জন্য উপযুক্ত হবে। এজন্য আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইট নাড়াচাড়া করছেন, ডিটেইলস স্পেসিফিকেশন চেক করছেন, মাঝে মাঝে অ্যাড টু কার্ট করছেন আবার কি সব ছাইপাশ ভেবে কার্ট থেকে রিমুভ করছেন। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে একবার আলীবাবার ওয়েবসাইটেও ভিজিট করেছেন আপনি। সেখানে এইচপি ব্র্যান্ডের এলিটবুক সিরিজের একটি ল্যাপটপ আপনার পছন্দ হয়েছে। দেশীয় শপগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখলেন এই ল্যাপটপ এখানে পাওয়া যায় না। তাই কিছুক্ষণ ভেবেচিন্তে আলীবাবার সাইটে অ্যাড টু কার্ট করলেন। করেই পেমেন্ট মেথড পরে অ্যাড করবেন বলে সাইট থেকে চলে আসলেন। যেহেতু ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন তাই ঝামেলা আছে। বন্ধুবান্ধব কারো কাছে কার্ড আছে কিনা খোঁজখবর নিতে হবে।
ওয়েবসাইট থেকে এক্সিট করেই ফেসবুকে গেলেন বন্ধুবান্ধবের সাথে যোগাযোগ করার জন্য যে তাদের কারো কাছে কার্ড আছে কিনা যেটা দিয়ে আপনি পেমেন্ট করতে পারবেন।
কিন্তু কি আশ্চর্য! ফেসবুকে ঢুকার সাথেই সাথেই আলীবাবার অ্যাড। শুধুই কি অ্যাড! একটু আগে আলীবাবার ওয়েবসাইটে আপনি যে ল্যাপটপটা অ্যাড টু কার্ট করে এসেছেন গোটা সেই ল্যাপটপটাই এখন আপনার নিউজফিডে ভাসছে। বারবার একই প্রোডাক্টের অ্যাড আপনার সামনে আসছে।
এটা কি করে সম্ভব? ফেসবুক কি করে জানলো যে আপনি এই প্রোডাক্টের ব্যাপারে আগ্রহী? আপনি তো ফেসবুক কে বলে দেননি তাইনা?
হ্যাঁ, এটাই ফেসবুক পিক্সেলের কাজ। আপনি যখন আলীবাবার ওয়েবসাইট ভিজিট করেছিলেন তখন আলীবাবার ওয়েবসাইটে আগে থেকেই সেট করে রাখা পিক্সেল আপনার প্রতিটি অ্যাকশন ট্র্যাক করেছে। আপনি কোন পেজ ভিজিট করেছেন, কোন প্রোডাক্ট দেখেছেন, কোন পেজে কত সময় ধরে ভিজিট করেছেন, কোন বাটনে ক্লিক করেছেন, কোন পেজ কতটুকু স্ক্রল করেছেন, কোন প্রোডাক্ট অ্যাড টু কার্ট করেছেন ইত্যাদি সকল অ্যাকশন ট্র্যাক করেছে।
এখন সেই ডাটা ব্যবহার করে আপনাকে রিটার্গেট করেছে। তাই আপনি ওই একই প্রোডাক্টের অ্যাড বারবার দেখছেন। যতক্ষণ আপনি পারচেজ না করছেন ততক্ষণ আপনার সামনে বারবার প্রোডাক্ট দেখিয়ে আপনাকে কনভিন্স করার চেষ্টা করছে। আপনি ভুলে গেলে মনে করিয়ে দিচ্ছে। এই আর কি!
সহজ ভাষায় যদি বলি তাহলে বলা যায় যে, ফেসবুক পিক্সেল হচ্ছে একটি জাভাস্ক্রিপ্ট কোড স্নিপেট যেটি ওয়েবসাইটে বসিয়ে দিলে আপনার কাস্টমারের যাবতীয় ডেটা ট্র্যাক করে ফেসবুকে পাঠায়। যা ব্যবহার করে আপনি ফেসবুক অ্যাডস এর কনভার্সন ট্র্যাক করতে পারেন, অ্যাডস অপ্টিমাইজ করতে পারেন, কাস্টম অডিয়েন্স ক্রিয়েট করতে পারেন, যারা অলরেডি আপনার ওয়েবসাইটে কোনো না কোনো অ্যাকশন নিয়েছে (ওয়ার্ম কাস্টমার) তাদেরকে নিয়ে রিমার্কেটিং ক্যাম্পেইন চালাতে পারেন।
0 Comments: