ধরুন, আপনি একজন ডিজিটাল মার্কেটার। আপনার কাছে একটি অনলাইন শপের মালিক এসে বললো আমার মান্থলি মার্কেটিং বাজেট ১০০০ ডলার। এখন আপনি আমাকে একটা মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি দেন। আপনি কি করবেন?
আপনি কি করবেন জানিনা, তবে আমি হলে এতো প্যাঁচপুঁছে না গিয়ে একটা সহজ-সরল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি তৈরি করে দিতাম।
একদম সহজ-সরল ৫ টি ধাপ।
প্যারেটো প্রিন্সিপাল বা ৮০/২০ রুলস বলে একটি রুলস আছে যার সারকথা হচ্ছে ৮০% আউটকাম আসে ২০% ইনপুট থেকে। অন্যান্য বিষয়ের মতো মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেও আমরা এই বিষয়টি খেয়াল করি। যখন কোনো মার্কেটিং ক্যাম্পেইন লঞ্চ করা হয় তখন দেখা যায় যে, কোম্পানির ৮০% রেভিনিউ আসছে ২০% কাস্টমার থেকে।
তো মার্কেটার হিসেবে আমাদের কাজ হবে বিভিন্ন টার্গেটেড অডিয়েন্সের উপর এ/বি টেস্টিং এর করে সেই সঠিক টার্গেট অডিয়েন্সটিকে খুঁজে বের করা যারা আমাদের কোম্পানির ৮০% রেভিনিউ এনে দিবে। ডেমোগ্রাফি, লোকেশন, ইন্টারেস্ট, প্রফেশন ইত্যাদি ফাইন্ড আউট করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথম দিকে আপনার উচিত হবে অধৈর্য না হয়ে ব্যাপারটা পুরোপুরি সেই মার্কেটার বা এজেন্সির উপর ছেড়ে দেওয়া। কারণ যেহেতু এই মুহূর্তে এ/বি টেস্টিং চলছে সেহেতু এই মুহূর্তে রেভিনিউ কম বা আশানুরূপ না আসতেই পারে। তাই বলে হতাশ হওয়া যাবে না বা সেই মার্কেটার খারাপ এই ধারণা পোষন করা যাবে না। অ্যাড অপটিমাইজেশনের পর আপনি ভালো রেজাল্ট আশা করবেন।
এরপর সেই অডিয়েন্সকে টার্গেট করে আপনার মান্থলি বাজেটের ৭০% খরচ করতে পারেন। এতে করে আশা করা যায় আপনি সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ROI পাবেন।
1
পুরো মাসের সেলস প্যাটার্ন এনালাইসিস করতে হবে। সাপোজ আপনার টার্গেটেড কাস্টমার যদি হয় ওয়ার্কিং প্রফেশনালস তাহলে দেখবেন যে মাসের প্রথম ১০ দিনে সেলস রেভিনিউ সর্বোচ্চ হবে, পরের ১০+১০ দিনের তুলনায়।
কারণ কি? কারণ এই সময়ে প্রফেশনালসরা সেলারি পায়। তাই বেশিরভাগ কেনাকাটা তারা এই সময়টাতেই করে। আপনার মার্কেটিং বাজেটের ৫০% এই প্রথম ১০ দিনে খরচ করুন। একটা নির্দিষ্ট এমাউন্টের পারচেজে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি করে দিন বা নির্দিষ্ট পরিমাণ এমাউন্টের ডিস্কাউন্ট দিন।
2
এরপর ধীরে ধীরে বাজেটের পরিমাণ কমাতে থাকুন। মাসের শেষ সপ্তাহে বা শেষ ১০ দিনে কম বিক্রি হওয়া প্রোডাক্টগুলোতে অফার দিন বা বেশি বিক্রি হওয়া প্রোডাক্টগুলোর সাথে কম্বো প্যাকেজ তৈরি করে অফার দিন।
3
অন্যান্য কনভেনশনাল মার্কেটিং এর মতো শুধুমাত্র ফেসবুকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে ৩৬০* এপ্রোচ নিন। ফেসবুকের পাশাপাশি বিভিন্ন মিডিয়াম থেকে আপনার ওয়েবসাইটে আসা কাস্টমারদের ফানেলে ফেলে রিটার্গেট করতে থাকুন, রিলেটেড সার্চ টার্মের জন্য গুগল পেইড অ্যাড (পিপিসি) চালাতে থাকুন, ডিসপ্লে অ্যাড চালান ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস ক্রিয়েটের জন্য, কাস্টমারের বিভিন্ন পেইনপয়েন্টের জন্য ব্লগ প্রকাশ করতে থাকুন। বিভিন্ন টিপস শেয়ার করতে থাকুন। যারা ইতোমধ্যেই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন কনভার্সন সম্পন্ন করেছে তাদেরকে ক্রসসেলিং/ আপসেলিং এর জন্য বিভিন্ন মিডিয়ামে রিটার্গেটিং করতে থাকুন।
4
একটা নির্দিষ্ট অডিয়েন্সকে টার্গেট করে প্রতিনিয়ত ইম্প্রেশন অ্যাড চালাতে হবে। ফেসবুক + গুগল ডিসপ্লে অ্যাড ব্যবহার করে এটা করা যেতে পারে। এই কাজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতে আপনার কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস ক্রিয়েট হবে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা আজকালকার এতো এতো ব্র্যান্ডের ভিড়ে মানুষ কেন আপনার কাছ থেকে কিনবে? তাই আপনার বিজনেসের জন্যও একটা আলাদা ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি প্রয়োজন। একই অডিয়েন্সকে বারবার অ্যাড দেখনোর জন্য ফ্রিকুয়েন্সি ক্যাপ ব্যবহার করুন।
5
যতদ্রুত সম্ভব একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক (সেটা হতে পারে ১ হাজার, ২ হাজার, বা যেকোনো সংখ্যা আপনার বিজনেস অনুযায়ী) রিকারিং কাস্টমার বেসড তৈরি করতে হবে। এতে করে আপনার মার্কেটিং বাজেট অনেকটাই কমে আসবে।
আর এর জন্য আপনার প্রিভিয়াস কাস্টমারদের সাথে যারা অলরেডি আপনার কাছ থেকে পারচেসড করেছে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে যেতে হবে নিয়মিতভাবে। এর জন্য ব্যবহার করতে পারেন মেসেজ, ইমেইল, স্পন্সরড মেসেজ, ডিসপ্লে অ্যাডস, রিমার্কেটিং অ্যাডস (ফেসবুক নিউজফিড, গুগল ডিসপ্লে, ইউটিউব ব্যানার অ্যাডস ইত্যাদি) ।
0 Comments: